• Home
  • ধর্ম
  • মহাভারতের অজানা কাহিনী দুষ্মন্ত ও শকুন্তলা ।
Image

মহাভারতের অজানা কাহিনী দুষ্মন্ত ও শকুন্তলা ।

শকুন্তলা ছিলেন হিন্দু পুরাণে বর্ণিত দুষ্মন্তের স্ত্রী ও সম্রাট ভরতের মা। তার উপাখ্যান মহাভারতের আদিপর্বে বর্ণিত আছে। কালিদাস তার অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ নাটকে এই কাহিনিটি নাট্যায়িত করেন। ঋষি কণ্ব বনে শিশুকন্যাটিকে “শকুন্ত” অর্থাৎ পক্ষীপরিবৃত অবস্থায় কুড়িয়ে পান। এই কারণে তিনি এর নামকরণ করেন “শকুন্তলা”। ঋষি বিশ্বামিত্রের ঔরসে অপ্সরা মেনকার গর্ভে শকুন্তলার জন্ম হয়। দেবরাজ ইন্দ্র বিশ্বামিত্রের তপস্যা ভঙ্গ করতে মেনকাকে তার নিকট প্রেরণ করেন। মেনকা তার কাজে সফল হন।তার রূপ ও লাবণ্যের মোহে বিশ্বামিত্র বিচলিত হন। সংযম হারিয়ে তিনি মেনকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। দীর্ঘকাল এইভাবে যৌনসংগম করার ফলে বিশ্বামিত্রর ঔরসে মেনকা গর্ভবতী হন। উভয়ের মিলনের ফলে একটি শিশুকন্যার জন্ম হয়। তপস্যার্জিত পুণ্যফল ক্ষয়ের জন্য ক্রুদ্ধ হয়ে বিশ্বামিত্র মেনকা ও তার কন্যাকে পরিত্যাগ করে চলে যান। এরপর মেনকাও তার শিশুকন্যাকে একটি বনে পরিত্যাগ করে চলে যান। ঋষি কণ্ব সেই কন্যাটিকে পক্ষীপরিবৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তিনি মেয়েটির নামকরণ করেন শকুন্তলা। এরপর শকুন্তলাকে নিজ আশ্রমে এনে লালন পালন করতে থাকেন।

  রাজা দুষ্মন্ত মৃগয়ায় এসে একটি হরিণকে তাড়া করতে করতে কণ্বের তপোবনে এসে উপস্থিত হন। এখানেই শকুন্তলার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। তারা পরস্পরের প্রেমে পড়েন ও আশ্রমেই তাদের গান্ধর্ব বিবাহ সম্পন্ন হয়, অর্থাৎ মালাবদল করে তারা মৈথুনে মিলিত হন। এরপর জরুরি কাজে দুষ্মন্তকে রাজধানীতে ফিরে যেতে হয়। যাওয়ার আগে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে একটি রাজকীয় অঙ্গুরীয় দিয়ে যান এবং কথা দেন যে আবার ফিরে আসবেন। শকুন্তলা গর্ভবতী হয়ে পড়ে। 

  এরপর শকুন্তলা অহর্নিশ দুষ্মন্তের কথা ভাবতে লাগলেন। একদিন কোপনস্বভাব ঋষি দুর্বাসা কণ্বের আশ্রমে এলে শকুন্তলা পতিচিন্তায় মগ্ন হয়ে ঋষিসেবায় অবহেলা করে। এতে দুর্বাসা ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে শাপ দেন যে, যাঁর কথা চিন্তা করতে করতে শকুন্তলা ঋষিসেবায় অবহেলা করেছে, সেই শকুন্তলাকে বিস্মৃত হবে। শকুন্তলার সখীরা তার হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, দুর্বাসা শান্ত হয়ে তাকে ক্ষমা করেন এবং বলেন যদি সেই ব্যক্তির দেওয়া কোনো উপহারসামগ্রী শকুন্তলা তাকে দেখায়, তবে আবার তিনি শকুন্তলাকে চিনতে পারবেন।

  এদিকে দুষ্মন্ত ফিরে আসছেন না দেখে শকুন্তলা নিজেই দুষ্মন্তের রাজধানীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। পথে নদীতে স্নান করতে নেমে তিনি দুষ্মন্তের দেওয়া অঙ্গুরীয়টি হারিয়ে ফেলেন। এরপর অঙ্গুরীয় ছাড়াই দুষ্মন্তের রাজসভায় উপনীত হলে, দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে চিনতে পারেন না। অপমানিতা শকুন্তলা বনে চলে আসেন। সেখানে জন্ম দেন এক পুত্রসন্তানের। তার নাম হয় ভরত। শৈশবেই ভরত হয়ে ওঠেন অকুতোভয় ও প্রবল পরাক্রমী। ছেলেবেলায় তার খেলা ছিল সিংহকে হাঁ করিয়ে তার দাঁতকপাটি গোনা। ইতোমধ্যে এক ধীবর মাছ ধরতে গিয়ে একটি মাছের পেট থেকে রাজার অঙ্গুরীয়টি উদ্ধার করে। সেটি দেখে দুষ্মন্তের শকুন্তলার কথা মনে পড়ে যায়। তিনি তাকে খুঁজতে বের হন। অনেক খুঁজে তিনি শেষে সিংহের সঙ্গে ক্রীড়ারত এক বালকের সন্ধান পান। নাম জিজ্ঞেস করতে ছেলেটি বলে সে দুষ্মন্তের পুত্র ভরত। এরপর ভরত দুষ্মন্তকে শকুন্তলার কাছে নিয়ে যায়। আবার সকলের মিলন ঘটে।

এরপর দুষ্মন্তর ঔরসে শকুন্তলার তিনটি পুত্রলাভ হয়।

Releated Posts

জাঁকজমক পূর্ণভাবে বিসর্জন তকিপুরের বড় মা কালীর, সামিল লক্ষাধিক মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদন: বীরভূমের তকিপুরে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে জাঁকজমক সহকারে বড় মা কালীর বিসর্জন অনুষ্ঠিত হল শনিবার। সকাল…

ByByKolkata NewsOct 25, 2025

গাইসাড়ায় খানকাহে বোখারিয়ায় “আই লাভ মোহাম্মদ” দাবিতে প্রতিবাদ সভা

মহঃ সফিউল আলম, রাজনগর, বীরভূম: বীরভূম জেলার গাইসাড়ায় অবস্থিত খানকাহে বোখারিয়ায় সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা…

ByByKolkata NewsOct 24, 2025

রাজনগরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমা নিরঞ্জনে কয়েক হাজার ভক্তের সমাগম ।

রাজনগর, বীরভূম, মহঃ সফিউল আলম: প্রাচীন ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভক্তির মেলবন্ধনে আবারও প্রাণ ফিরে পেল রাজনগরের সিদ্ধেশ্বরী মন্দির…

ByByKolkata NewsOct 23, 2025

রাজনগরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মালিপাড়ার সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে কালীপুজোয় ভক্তদের ভিড় ও ব্যস্ততা

রাজনগর, বীরভূম, মহঃ সফিউল আলম: বীরভূম জেলার রাজনগরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মালিপাড়ার সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে কালীপুজো ঘিরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে…

ByByKolkata NewsOct 21, 2025
Scroll to Top