
নিউটাউনের তরুণী গ্রেটা চৌধুরী এক অসামান্য সাফল্যের নজির গড়লেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি জয় করলেন মর্যাদাপূর্ণ ডি কে পেজেন্ট – প্রাইড অফ ইন্ডিয়া, মিস টিন ইন্ডিয়া ২০২৫ খেতাব। এই জয়ে পশ্চিমবঙ্গ যেমন গর্বিত, তেমনই গর্বিত গোটা দেশ।
গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল শুক্রবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ, দিল্লির দ্বারকা র্যাডিসন ব্লু-তে। সারাদেশের প্রতিযোগীদের মধ্যে সেরার মুকুট অর্জন করে গ্রেটা প্রমাণ করলেন যে স্বপ্ন ও কঠোর পরিশ্রম একসঙ্গে চললে সাফল্য অনিবার্য। জাতীয় স্তরে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করে এই সম্মান ঘরে তুলেছেন তিনি।
এর আগে, বুধবার ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ, সিটি/স্টেট ফাইনালে গ্রেটা প্রাইড অফ ইন্ডিয়া – মিস টিন ওয়েস্ট বেঙ্গল ২০২৫ খেতাব অর্জন করেছিলেন। সেখান থেকেই তিনি জাতীয় মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা অর্জন করেন। মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে রাজ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে তাঁর সাফল্য কেবলমাত্র ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বরং আমাদের সমগ্র রাজ্যের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।
গ্রেটা বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পড়াশোনার চাপ সামলে তিনি মডেলিংয়ের প্রতি ভালোবাসাকে সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর আত্মবিশ্বাস, সৌন্দর্য ও নিষ্ঠা মঞ্চে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। কম বয়সেই জীবনের দুই ভিন্ন ক্ষেত্র—শিক্ষা ও মডেলিং—এর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা নিঃসন্দেহে অনন্য উদাহরণ।

ডি কে পেজেন্ট – প্রাইড অফ ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতা দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চ, যেখানে সৌন্দর্যের পাশাপাশি প্রতিভা, বুদ্ধিমত্তা, আত্মপ্রকাশের ক্ষমতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা বিচার করা হয়। গ্রেটা এই সবক’টি ক্ষেত্রে সমান দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। ফাইনাল রাউন্ডে তাঁর উত্তর, উপস্থিত বুদ্ধি ও আত্মস্থ ভঙ্গি বিচারকদের মুগ্ধ করেছে।
তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রেটা চৌধুরী এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠছেন। তাঁর এই সাফল্য প্রমাণ করছে যে, স্বপ্ন দেখার সাহস থাকলে বয়স কোনো বাধা হতে পারে না। স্কুল, পড়াশোনা, পরিবার ও মঞ্চ—সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য রেখে তিনি যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন, তা আগামী দিনের অসংখ্য তরুণ-তরুণীকে স্বপ্ন দেখার ও সেই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসার সাহস জোগাবে।
নিউটাউনের এই কিশোরীর সাফল্যে গোটা এলাকা আনন্দে মেতে উঠেছে। পরিবার, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাঁর এই অর্জনে ভীষণ গর্বিত। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ছোটবেলা থেকেই গ্রেটা আত্মবিশ্বাসী, পরিশ্রমী এবং ইতিবাচক মানসিকতার অধিকারী ছিলেন। সেই গুণাবলীই তাঁকে আজ এই সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্নও ইতিমধ্যেই বুকে লালন করছেন গ্রেটা। তাঁর আশা, ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি মডেলিং ও সমাজসেবার ক্ষেত্রেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
গ্রেটা চৌধুরীর জয় কেবল একটি খেতাব জয় নয়—এটি পশ্চিমবঙ্গের গর্ব, তরুণ প্রজন্মের আশা এবং নারীর শক্তির এক অনন্য প্রতীক। তাঁর সাফল্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার কাছে কোনো বাধাই অপ্রতিরোধ্য নয়।















