
দক্ষিণ দিনাজপুর: কথায় আছে, সততা, ধৈর্য, চেষ্টা আর একনিষ্ঠ পরিশ্রমই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে – আর সেই কথাকেই বাস্তব করে দেখাল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সদর শহর বালুরঘাটের সৌম্যদীপ সরকার। নিজের শহর থেকে শুরু করে সোজা মুম্বাইয়ের বলিউডে এক ফোনেই ঘুরে গেল তাঁর জীবনের মোড়।
বর্তমানে সৌম্যদীপের গাওয়া গান “রেহে না রহে হাম” সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। গানটি নেটিজেনদের মুখে মুখে ফিরছে, ট্রেন্ডিং তালিকার শীর্ষে পৌঁছে গেছে এই বালুরঘাটের ছেলের কণ্ঠ। গানটি স্থান পেয়েছে পরিচালক অমর কৌশিকের নতুন হিন্দি ছবি “থামা”-য়, যেখানে অভিনয় করেছেন আয়ুষ্মান খুরানা, রশ্মিকা মান্দানা, পরেশ রাওয়াল ও নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী।
এই ছবির গানটির কথা লিখেছেন অমিতাভ ভট্টাচার্য এবং সুর দিয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীতজুটি শচীন-জিগার। তাদের সুরে গাওয়া সৌম্যদীপের মধুর কণ্ঠে গানটি ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে শ্রোতাদের হৃদয় জয় করেছে।
বর্তমানে মুম্বাইতেই নিজের গানের ক্যারিয়ার গড়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সৌম্যদীপ। ফোনে কথা বলার সময় তিনি জানান,
“একজন প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিল্পী হওয়ার লক্ষ্যে লড়াই করছি। সবার আশীর্বাদ, ভালোবাসা আর পরিশ্রমই আমার এগিয়ে যাওয়ার চাবিকাঠি।”

সৌম্যদীপের এই সাফল্যের পথ কিন্তু একেবারে সহজ ছিল না। কলকাতা ও মুম্বাইয়ের একাধিক সংগীত রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করলেও ২০২৪ সালের এক জনপ্রিয় শো-র দ্বিতীয় ধাপে এসে বাদ পড়ে যান তিনি। কিন্তু সেটাই হয়ে ওঠে জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।
রিয়েলিটি শো থেকে বাদ পড়ার কিছুদিন পরই সৌম্যদীপ যখন বালুরঘাটে ফিরছিলেন, তখনই ঐ শোয়ের সংগীত পরিচালক শচীন-জিগার ফোন করে তাঁকে আবার মুম্বাইয়ে ডেকে নেন। সেখানেই শুরু হয় নতুন অধ্যায় – “থামা” সিনেমার জন্য তাঁর গাওয়া গান “রেহে না রহে হাম”-এর রেকর্ডিং।
সৌম্যদীপ বলেন,
“বলিউডে নিজের কণ্ঠে গান গাইতে পেরে আমি ধন্য ও আপ্লুত। সুযোগ পেয়েছি শচীন-জিগার স্যারের জন্য, তাঁদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। ছোট থেকেই সংগীতের প্রতি ভালোবাসা ছিল, নিয়মিত রেওয়াজ করি। সবার আশীর্বাদ আর ভালোবাসা নিয়েই আরও এগিয়ে যেতে চাই।”
ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত সৌম্যদীপের বাবা বিপুল সরকার বলেন,
“ও সঙ্গীত জগতে আরও প্রতিষ্ঠিত হোক – এই কামনাই করি।”
বাবার চোখে-মুখে গর্বের ঝিলিক, আর ছেলের মুখে একটুকরো সাফল্যের হাসি। দক্ষিণ দিনাজপুরের এই তরুণ আজ প্রমাণ করে দিয়েছেন – ছোট শহর থেকেও বড় স্বপ্ন পূরণ করা যায়, যদি সেই স্বপ্নের জন্য নিরলস পরিশ্রম ও একনিষ্ঠ বিশ্বাস থাকে।
আগামী দিনে সংগীত জগতে সৌম্যদীপের এই উজ্জ্বল যাত্রা এক নতুন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে জেলার প্রতিটি তরুণের কাছে – এতে কোনও সন্দেহ নেই।














