
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে শনিবার গভীর রাতে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর এলাকাদখলের লড়াইয়ের জেরে বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণের মাঝে প্রাণ হারাল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কৌসেরা বেগম (১২)। এই ঘটনায় গোটা ইসলামপুরজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর এলাকার রফিক আলম ও নুর আলম এই দুই প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকাদখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। অভিযোগ, শনিবার রাতে সেই বিবাদ চরম আকার নেয়। নিহত কিশোরীর বাবা জাহিদ আলম রফিক আলমের সমর্থক বলে পরিচিত। অভিযোগ অনুযায়ী, নুর আলমের অনুগামীরা জাহিদ আলমের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। সেই সময় বাড়ি লক্ষ্য করে একাধিক বোমা ছোড়া হয় এবং গুলিবর্ষণও করা হয়।
হঠাৎ এই হামলার মধ্যে পড়ে যায় কৌসেরা বেগম। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে দ্রুত ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অল্প বয়সে একটি নিরীহ কিশোরীর মৃত্যুতে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ তৎপরতা শুরু করে। ইতিমধ্যেই দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইসলামপুরের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা এলাকা কার্যত ঘিরে ফেলা হয়েছে পুলিশের নজরদারিতে।
বর্তমানে ইসলামপুরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে অপ্রয়োজনীয় কাজে বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে আরও উত্তপ্ত না হয়, সেই জন্য কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
নিহত কৌসেরা বেগমের পরিবারের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, নিরীহ শিশুর মৃত্যু কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না, দোষীদের কঠোরতম শাস্তি চাই।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকায় শান্তি ফেরাতে প্রশাসন সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় আবারও প্রশ্ন উঠছে এলাকাদখলের রাজনৈতিক বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বলি কেন হতে হবে নিরীহ শিশুদের?

















