
দুর্গাপুর: তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মদন মিত্রর বিরুদ্ধে রামচন্দ্রকে মুসলিম বলার অভিযোগ তুলে তীব্র বিক্ষোভে সামিল হল সনাতনী ঐক্য মঞ্চ। পাশাপাশি বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানানো হয়। রবিবার সকাল থেকে দুর্গাপুরের বেনাচিতি পাঁচমাথা মোড়ে পথ অবরোধ করে আধঘন্টা ধরে চলে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি, যার জেরে সাময়িকভাবে ব্যাহত হয় যান চলাচল।
এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন বিজেপির জেলা মুখপাত্র সুমন্ত মন্ডল এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মদন মিত্রের মন্তব্যে হিন্দুদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা হয়েছে। রামচন্দ্রকে নিয়ে করা ওই মন্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু সমাজকে অপমান করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।

বিক্ষোভকারীদের আরও অভিযোগ, শুধু রাজ্যের মধ্যেই নয়, প্রতিবেশী বাংলাদেশেও ধারাবাহিকভাবে হিন্দুদের উপর অত্যাচার চলছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলা, নির্যাতন ও সম্পত্তি লুঠের ঘটনা বাড়ছে, অথচ সেখানকার সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বেনাচিতি পাঁচমাথা মোড়ে অবরোধের জেরে গুরুত্বপূর্ণ ওই এলাকায় কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে দুর্গাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশি হস্তক্ষেপে অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে প্রায় আধঘন্টা পর স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।

বিক্ষোভ চলাকালীন বিজেপি নেতা সুমন্ত মন্ডল বলেন, “রামচন্দ্রকে অপমান করা হচ্ছে। হিন্দুদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির উপর আঘাত করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, ধারাবাহিকভাবে হিন্দু সমাজকে নিশানা করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “একইসঙ্গে বাংলাদেশেও হিন্দুদের উপর বেলাগাম আক্রমণ চলছে। সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রতিবাদ।”
জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্তের বক্তব্য, “আজকের এই কর্মসূচি প্রতীকী বিক্ষোভ। আমরা প্রশাসন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যদি হিন্দুদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা সুনিশ্চিত করা না হয়, তাহলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হব।”
বিক্ষোভকারীরা জানান, এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা শুধু মদন মিত্রর মন্তব্যের নিন্দাই করছেন না, বরং সামগ্রিকভাবে হিন্দু সমাজের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষার দাবি তুলছেন। যদিও এই অভিযোগ ও বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস বা সংশ্লিষ্ট নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনার জেরে দুর্গাপুরের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনের আবহে এ ধরনের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ইস্যু ঘিরে আগামী দিনে আরও আন্দোলন ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

















