
আজ ৬৪ তম শিক্ষক দিবস পালিত হল সারা ভারতবর্ষ জুড়ে স্কুল ও কলেজে। একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকার দীপকের ন্যায়, যিনি নিজেকে ধীরে ধীরে নিঃশেষিত করে, অন্যের চলার পথকে আলোকিত করেন। জাপানে একটি কথার খুব বেশি প্রচলন আছে, হাজার দিন কঠোর অধ্যায়নের চাইতে, একদিন মহান কোন এক শিক্ষক ও শিক্ষিকার, সান্নিধ্যে থাকা আমাদের জন্য বেশি ভালো।
ঠিক তেমনি এক শিক্ষক ভারতের ইতিহাসে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসাবে রয়েছেন। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ। তিনি একজন ভারতের বলিষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যাক্তি হিসেবেই পরিচিত। পুনরায় তিনি ভারতের শিক্ষা দপ্তরে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন,ও সেই সময় তিনি শিক্ষা দপ্তরের মান অনেকখানি উন্নত করেছিলেন, কিন্তু আজ দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা উল্টো কথা বলতে অভ্যস্ত। তিনি ভারতীয় শিক্ষা জগতে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন, দর্শন শাস্ত্রের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ জ্ঞান এবং ওই বিষয়ে তিনি চর্চা শুরু করেন মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন, তিনি যে বিশেষ অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন ভারতের তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি একজীবনে অনেক সম্মান অর্জন করেছেন। ১৯৫৪ সালে, ভারত রত্ন পুরস্কারে সম্মানিত,১৯৪৯ সালে সোভিয়েত, ইউনিয়নের ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, অবশেষে কালের নিয়মে তিনি ১৯৭৫ সালে,১৬ই, এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন ৮৬ বছর বয়সে।
ভারতীয় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থা না থাকলে, ভারত আগামী দিনে অস্তাচলে। কিন্তু আজ বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রে চলছে চরম অরাজকতা, দিনের পর দিন রাস্তায় বসে রয়েছেন শিক্ষকেরা, যাদের বই হাতে ক্লাসরুমে থাকার কথা। মানসিক চাপে প্রাণ খোয়াতে হলো সুবল সরেনের মতো শিক্ষকদের আবার গ্রেফতার হচ্ছেন সুমন বিশ্বাসের মতো সাহসী শিক্ষকনেতারা। রবীন্দ্রনাথ, নেতাজীর বাংলা আজ শিক্ষার জন্য মস্ত অচলআয়তনে পরিণত হয়েছে। রাস্তায় বসে মার খাচ্ছে শিক্ষকেরা, কপালে জুটেছে ‘চাকরিহারা’ ট্যাগ। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি বাংলা, যোগ্য-অযোগ্য ভাগে জর্জরিত করেছে জাতির মেরুদন্ডকে। অথচ এই শিক্ষকরায় ভবিষ্যতের কারিগর তৈরীর কান্ডারী। শিক্ষা না থাকলে চোখে সরষে ফুল দেখবে সবাই। আমাদের দুর্ভাগ্য বাংলায় যোগ্য শিক্ষক হয়েও তাঁর মানসিক চাপে মৃত্যু ঘটে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি, এই শিক্ষক দিবসে।
✍️ পঙ্কজ ভান্ডারী

















