
রায়গঞ্জের ইতিহাসে যুক্ত হল নতুন এক স্বর্ণালী অধ্যায়। প্রথমবারের জন্য রায়গঞ্জ থেকে কোনও মহিলা এভারেস্ট বেস ক্যাম্প (Everest Base Camp) অভিযানে সফল হলেন। দেবীনগরের বাসিন্দা এবং সুভাষগঞ্জ হাইস্কুলের বাংলা বিষয়ের শিক্ষিকা ৪০ বছর বয়সি জয়িতা বর্মন এই সাফল্য অর্জন করে নজির গড়েছেন। দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্য নিয়ে স্বামী বাপ্পাদিত্য সিনহা ও বছর দশেকের ছেলে আরহান সিনহাকে রেখে তিনি অভিযানে পা বাড়ান।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ এপ্রিল রায়গঞ্জ থেকে রওনা দেন জয়িতা। হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স এন্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন (HMTA)-র হয়ে এর আগেও সান্দাকফু ও গোচেলা ট্রেক সম্পন্ন করেছেন। তবে এবারের অভিযান ছিল তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং পথচলা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মোট আটজন অভিযাত্রী নিয়ে গঠিত দলে ছিলেন জয়িতা। টানা হিমালয়ের প্রতিকূল আবহাওয়া, তুষারপাত এবং বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করে গত ২৭ এপ্রিল তিনি পৌঁছান এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। সেখানেই ভারতের তেরঙ্গা ও নিজের স্কুলের পতাকা উড়িয়ে আবেগমথিত মুহূর্ত ভাগ করে নেন।
অভিযানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জয়িতা জানান,
“১৭ এপ্রিল ভদ্রপুর হয়ে ত্রিভূবন বিমানবন্দর পার করি। তারপর রামেছাপ, লুকলা এবং একের পর এক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে ২৭ এপ্রিল বেস ক্যাম্পে পৌঁছাই। টানা দু’দিন তুষারপাত ও বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে হয়েছে। জীবনে এত বরফ আগে কখনও দেখিনি।”
তার কথায়, “এটা শুধু আমার নয়, রায়গঞ্জের সব মেয়েদের জয়। স্কুলের পতাকা উড়িয়ে ভীষণ আনন্দ পেয়েছি।”
বর্তমানে কাঠমান্ডু থেকে বাসে চেপে রায়গঞ্জে ফেরার পথে জয়িতা আরও জানান,
“স্বপ্ন এবার চূড়ার দিকে। ভবিষ্যতে এভারেস্ট শৃঙ্গেও পৌঁছাতে চাই।”
জয়িতার এই সাফল্যে গর্বিত হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ার্স এন্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পার্থ পাল। তিনি বলেন,
“রায়গঞ্জের জয়িতার এই সাফল্য নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তার অধ্যবসায় এবং সাহস সবাইকে উৎসাহ দেবে।”
রায়গঞ্জের মেয়ে জয়িতা বর্মনের এই কৃতিত্ব প্রত্যন্ত বাংলার মেয়েদের স্বপ্নপূরণের নতুন পথ খুলে দিল, এমনটাই মত স্থানীয়দের।














