বীরভূমের প্রাচীন রাজধানী ও ঐতিহাসিক কেন্দ্র রাজনগরে আবারও শুরু হয়েছে বেড়া তৈরির ব্যস্ততা। ভাদ্রমাস আসলেই রাজনগর থানা সংলগ্ন হাটতলা মোড়, বণিকপাড়া, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন দশকর্মার দোকান কিংবা মালিপাড়ায় চোখে পড়ে বেড়া শিল্পীদের টানা কাজের দৃশ্য। স্থানীয়দের মতে, মালাকার পদবির পরিবারগুলি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই শিল্পকে ধরে রেখেছেন। ইতিহাস অনুযায়ী, রাজনগরের রাজারা বহু শতাব্দী আগে এই প্রথার সূচনা করেছিলেন। এখনও এলাকার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে ভাদ্রমাসে বেড়া পরব পালন করা হয়।

গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, জলের পীরকে তুষ্ট করার জন্য এবং শিশুদের নদী, পুকুর, জলাশয় বা ডোবায় বিপদ থেকে রক্ষার জন্যই এই সামাজিক প্রথার প্রচলন। আজও সেই বিশ্বাসে টিকে আছে এই ঐতিহ্য। বেড়া শিল্পী ভোলা মালাকার, প্রয়াত মদন মালাকারের কন্যা তনুশ্রী, রিন্টু মালাকার ও সুব্রত মালাকার জানিয়েছেন, এ বছরও রঙিন ও বৈচিত্র্যময় বেড়া তৈরি করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বিক্রি শুরু হলেও ভাদ্রমাসের শেষ দিকে চাহিদা সর্বাধিক হয় বলে তাঁদের ধারণা।

শিশুদের উৎসাহ উদ্দীপনায় এই বেড়া পরব আজও রাজনগরের গ্রামীণ সংস্কৃতিকে জীবন্ত করে তুলছে। একদিকে জীবিকার মাধ্যম, অন্যদিকে সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি বেড়া শিল্প আজও বীরভূমের রাজনগরের ঐতিহ্য বহন করছে গর্বের সঙ্গে।














